ওম

শীত (জানুয়ারী ২০১২)

A.N.M.SHAFIQUL
  • ২৪
  • 0
  • ৪১

-দাদীমা মাইকে চিল্লান দিছে আইজ বিকালের ট্রেইনে ঢাকার থুন মেলা ওম কাপড় আইবো।
-তাতে তোর কি?
- কি কও আমি দুপুর থন দাড়ায়া থাকমু।সবার আগে কাপড় নিমু।তোমার জন্য আনুমনে।
-তোরে দুইডা দিব?
-না দিলে সাহেবদের পায় ধরমু।তাও দিবনা?
- বদ্দলোকের কথা আমি কেমনে কই ?
-তারপরও যদি একটা দিবার চায়,কমু, ভাইজান তাইলে একটা কম্বল দেন।ছিড়া কাঁথায় দাদীমারে শীত খুব কষ্ট দেয়।
তুমি ঘরে থাইক, আমি নিয়া আইতাছি।
ভাঙা চালার ঝুলে খাকা ছনের গা দিয়ে চুয়ে চুয়ে পড়ছে কুয়াশা।এর মাঝে নির্বিকার ভাবে বশে আছে মালিহা বেওয়া।সংসার বলতে দুইজন মানুষ।স্‌ত্তর বছর বয়েসও খাবার জোগাড় করতে ভিক্ষা করতে হয় তাকে।সংগী বলতে সাত বছরের নাতী ছলিম।গত বছর বৃষ্টির সময় লালমণিরহাট রেল স্টেশনের পাশে বসে ভিজছিল ছেলেটি।অনেকদিন পর নিজের মুক্তিযোদ্ধা ছেলেটির কথা মনে পড়ে গিয়েছিল তার।শেষবার যুদ্ধ করে কাকভেজা হয়ে বাড়ি ফিরেছিল ছেলেটি।
কাছে ডাকতেই পিছন পিছন চলে এসেছিল ছলিম।কোন কথা বলেনি। আসলে ছলিমেরও তিন কূলে কেউ আছে জানা যায়নি।একদিন ভিক্ষা না করলে উপোস করা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।ইদানিং শরীরটাও কেমন যেন ঘূণে খাওয়া গাছের মত চলতে চায়না।
হু-হু করে ঠান্ডা এসে আছড়ে পড়ছে ছনের বেড়ায়।ঘরের জানালার অংশটুকু আগলে রাখা নারিকেল গাছের মরা পাতাগুলো এই উড়ে যায় যায় অবস্থা।
-দাদীমা বাইরে অনেক ঠান্ডা।কি একটা নিচের দিকে চাপ হইছে তাই ট্রেন দশ ঘন্টা পরে আইবো।
-তুই এত রাত করলি কেন?
-ভাবলাম ভুলে যদি ট্রেনটা চইলা আসে।
-কিছু খাইছিস্।ঘরে কিন্তু কিছুই নাই খাওনের।
-দাদীমা আমি কিছু খামুনা। আমার অনেক শীত লাগতাছে। আমারে একটু ওম দিবা?
-এ কি তোর গা তো জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে ।
(জ্বরে প্রলাপ বকতে শুরু করেছে ছলিম) ওরা কি কোম্বল দিবনা দাদীমা ? ওদাদীমা?
ছেড়া কম্বলটা জড়িয়ে দিলেন ছলিমের গায়ে।কিছুতেই কাপুন কমানো যাচ্ছেনা।ঘরে একটুকরো কাপড়ও নেই কোথাও।নিজের মনেই চিন্তা করলেন,লজ্জা বা হারানোর কিছু নেই তার।নিজের শরীরের ছেঁড়া শাড়ীটাই খুলে জড়িয়ে দিলেন ছেলেটির গায়ে।নিরাভরণ বৃদ্ধার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল দু ফোটা অশ্রু।বাচ্চাটিকে ওম দিতে পারার আনন্দে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি অনেক ভাল লাগল|
ভালো লাগেনি ২৮ জানুয়ারী, ২০১২
রোদের ছায়া সুন্দর ছোটগল্প , প্রথম হিসাবে সত্যি অনেক ভালো /
ভালো লাগেনি ২৪ জানুয়ারী, ২০১২
মামুন ম. আজিজ কি একটা নিচেরদিকে চাপ দিবো মানে নিম্নচাপ....লেখকের রসবোধ বোধ বেশ তো।
সেলিনা ইসলাম ছোট্ট পরিসরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে এনেছেন গল্পের মাঝে -এ আমাদেরই অক্ষমতা মালিহা বেওয়ার মত একজন মুক্তিযোদ্ধার জন্মধাত্রী জীবনের শেষ প্রহরেও কি নিদারুণ কষ্টে আছে অথচ আমরা কিছুই করতে পারছি না ! ভাল লাগল আপনার অনুগল্পটি শুভেচ্ছা ও শুভকামনা
ভালো লাগেনি ২০ জানুয়ারী, ২০১২
A.N.M.SHAFIQUL "এ কি তোর গাডা তো জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। " গাডা শব্দটা আসলে আপনার এমন মনে হত না।
ভালো লাগেনি ২০ জানুয়ারী, ২০১২
আসন্ন আশফাক "এ কি তোর গা তো জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে ।" এই ভাষাটি মনে হয় ঠিক যায়না এখানে , বাকি টুকু মোটামুটি ভালই , এগিয়ে যান
ভালো লাগেনি ১৯ জানুয়ারী, ২০১২
A.N.M.SHAFIQUL জুয়েল ভাই, ভাল লাগল অন্তত একজন লেখার মূল সুতায় হাত দিতে পেড়েছে।ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১২
এফ, আই , জুয়েল # কষ্টের করুন সুর গল্পে দারুনভাবে ফুটে উঠেছে ।
ভালো লাগেনি ১৬ জানুয়ারী, ২০১২
A.N.M.SHAFIQUL ধন্যবাদ সালেহ মাহমুদ ভালো মন্তব্য এর জন্য
ভালো লাগেনি ১৬ জানুয়ারী, ২০১২
সালেহ মাহমুদ খুব ভালো লাগলো, সুন্দর হয়েছে গল্পটা।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১২

০২ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪